“একজন অভিজ্ঞ বৃদ্ধের কাছ থেকে পরামর্শ”-এর ভাষান্তর

দুঃখের বিষয় সম্বন্ধিত এই উপদেশটি পরমপ্রিয় আচার্য গুঙ্‌থাঙ্‌ রিনপোছে (গুঙ্‌-থাঙ্‌-ছাঙ্‌-কোন-ছোগ তেন-পে ড্রোন-মে (১৭৬২-১৮২৩)-এর একজন অভিজ্ঞ বৃদ্ধের (ঞম-ঞোঙ্‌-গেন-পোই-বেল তাম) নৈতিক কথা থেকে উদ্ধৃত করা হয়েছে। শাস্ত্রের উপর আধারিত পদ্য আকারে প্রস্তুত এই গল্পটি অনেক দৃষ্টান্তে পরিপূর্ণ। এই উপদেশের মূল বিষয় হল, আমাদের ত্যাগ এবং মুক্তির সংকল্প গড়ে তুলতে সাহায্য করা এবং সাধারণভাবে সকলের কল্যাণের জন্য বোধিপ্রাপ্তির উদ্দেশ্যে বোধিচিত্তের ভিত্তি স্থাপন করা।

এমন নির্মল বুদ্ধকে নমস্কার, যিনি কর্মগতি এবং অশান্তকারী আবেগের প্রভাবে চলমান অনিয়ন্ত্রিত পুনর্জন্মের বীজ পরিত্যাগ করেছেন এবং পরিণামস্বরূপ যিনি জরা, ব্যাধি এবং মৃত্যুর দুঃখকে ভয় করেন না।
সংসারের বিস্তীর্ণ, নিঃসঙ্গ, বন্য সমভূমির মধ্যে একজন বৃদ্ধ মানুষ বাস করেন, যার সাথে দেখা করতে আসে একজন যুবক, যিনি তার যৌবন এবং স্বাস্থ্য নিয়ে গর্বিত। তাদের মধ্যে এই আলোচনাটি হয়।
“হে বৃদ্ধ মহাশয়, আপনার আচরণ, মুখমন্ডল এবং কথা-বার্তা অন্যদের থেকে ভিন্ন কেন?”
এই প্রশ্নের উত্তরে বৃদ্ধ বললেন, “যদি তুমি বলো আমার আচরণ আর কথা-বার্তা অন্যদের থেকে আলাদা, তাহলে এটা ভেবো না যে তুমি আকাশে উড়ছো। আমার মতো এই পৃথিবীতে ফিরে এসো এবং আমার কথাগুলি শোনো।”

কিছু যুবক মনে করেন যে বার্ধক্যতা কেবল বয়স্কদের কেবল ক্ষেত্রেই ঘটে এবং এটা তাদের জীবনে কখনোই আসবে না। তারা খুব অহংকারী হয় এবং তাদের কোনো ধৈর্য থাকে না যে, বার্ধক্যতার সাথে আদৌ তাদের কোন সম্পর্ক আছে।

বৃদ্ধ আরও বললেন, “কয়েকবছর আগে, আমি আপনার চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী, আরও রূপবান এবং আরও তেজস্বী ছিলাম। আমি এখন যেমন আছি জন্ম থেকেই এরকম ছিলাম না। আমি দৌড়ে গেলে উড়ন্ত ঘোড়াও ধরতে পারতাম।”

বেশির ভাগ বয়স্ক মানুষরা এভাবেই কথা বলে। বর্তমান কখনোই পুরনো দিনের মতো ভাল হয় না।

“আমি যদি কিছু ধরতাম, আমি নিজের হাত দিয়ে যাযাবরের দেশের চমরী গাইকেও ধরতে পারতাম। আমার শরীর এত নমনীয় ছিল যে আমি আকাশে পাখির মতো বিচরণ করতে পারতাম। আমার শরীর এত ফিট ছিল যে আমাকে তরুণ দেবতার মতো লাগতো। আমি উজ্জ্বল রঙের জামাকাপড় এবং সোনা-রুপোর অলঙ্কার পরেছি, প্রচুর সুস্বাদু খাবার ও মিষ্টি খেয়েছি এবং শক্তিশালী ঘোড়ায় চড়েছি। আমি খেলা, হাসা এবং উপভোগ করা ছাড়া খুব কম সময়ই একা একা বসে থাকতাম। খুব কম প্রকারেরই সুখ আছে যেটা আমি উপভোগ করিনি। ঐ সময়, আমি কখনো আমার জীবনের অনিত্যতা অথবা আমার মৃত্যুর সম্পর্কে ভাবিনি। না আমি এখনকার মতো বার্ধক্যের দুঃখ-কষ্টের মধ্য দিয়ে যাব ব’লে মনে করেছিলাম।”

“আমি যেখানে বাস করতাম সেই অঞ্চলে একসময় একজন যুবক ছিল, সে বিলাসবহুল জীবনযাপন করত এবং সর্বদা আনন্দে লিপ্ত থাকত। ধীরে-ধীরে সে বুড়ো হয়ে গেল, তার শরীর বেঁকে গেল, তার আয় কমে গেল। সে তার বন্ধুদের বলেছিল, “আমি কখনোও ভাবিনি যে বার্ধক্য এরকম হঠাৎ ক’রে আসবে।”

“বন্ধু, পার্টি ও মনোরঞ্জনের এই বিভ্রান্তির মধ্যে বার্ধক্য লুকিয়ে চলে আসে এবং আমাদের হাসির কন্ঠের মধ্যে এসে আমাদের ঘিরে ধরে।”

গেশে কামাপা বলেছেন, “আমাদের কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত যে বার্ধক্য ধীরে-ধীরে আসে। যদি এটা একবারে চলে আসে তাহলে এটা অসহনীয় হবে। যদি আমরা ত্রিশ বছর বয়সে ঘুমোতে যাই এবং ঘুম থেকে উঠে দেখি আশি বছরের মতো দেখতে লাগছে, আমরা নিজেদেরকে দেখে সহ্য করতে পারি না। আমরা আমাদের নিজস্ব বার্ধক্য বুঝতে পারি না। আমরা কীভাবে বৃদ্ধ হয়েছি সেটা আমাদের কাছে একটা সম্পূর্ণ রহস্য হয়ে যায়। আমরা যখন হঠাৎ ক’রে আমাদের বার্ধক্যকে অনুভব করি, তখন সেটা মেনে নিতে একটু সময় লাগে। তখন অনেক দেরী হয়ে যায়। যদিও বলা হয় যে মৃত্যুর কয়েক ঘন্টা পূর্বে ধর্মচর্চা করা উপকারী, কিন্তু তন্ত্র অনুশীলনে নিয়োজিত হওয়ার জন্য আমাদের শারীরিকভাবে সুস্থ শরীরের দরকার হয়। সুতরাং, তরুণ বয়সেই তান্ত্রিক সাধনা শুরু করা আবশ্যক।”

“আমরা যখন খুব বৃদ্ধ হয়ে যাই, যখন আয়নায় নিজেদের দেখি তখন আমরা নিজেরাই নিজেদেরকে অপছন্দ করি। তখন আমাদের শরীর ও মন দুর্বল হয়ে পড়ে। আমাদের শরীরের মাথা থেকে পা পর্যন্ত ক্ষয় হতে শুরু করে। আমাদের মাথা এমনভাবে বাঁকানো থাকে যেন মনে হয় সবসময় ঘট অভিষেক গ্রহণ করার মুদ্রায় আছি।”
“আমার মাথার সাদা চুল, কোন কালো বাকি নেই, এটার শুদ্ধির কোন লক্ষণ নয়। এটা যমরাজের মুখ থেকে নিক্ষিপ্ত তুষার তীর, যেটা আমার মাথার উপর অবতরণ করেছে। আমার কপালের রেখাগুলি মায়ের কোলে দুগ্ধ পানরত একটি মোটাসোটা বাচ্চার মতো নয়। আমি ইতিমধ্যে কত বছর জীবনযাপন করেছি সেটা মৃত্যুর দেবতার বার্তাবাহকদের যমদূতের গণনা। আমি যখন আধখোলা চোখে তাকাই, তখন আমার চোখে ধোঁয়াশা থাকে বলে নয়। এটা আমার ইন্দ্রিয় শক্তির অবক্ষয়ের কারণে অসহায় হওয়ার লক্ষণ। আমি যখন আমার কানে হাত লাগিয়ে কিছু শোনার জন্য চেষ্টা করি, তার মানে এই নয় যে আমি গোপনীয় আলাপ-চারিতা শুনছি। এটা হল আমার শ্রবণ শক্তির অবক্ষয়ের লক্ষণ।”
“যখন আমার লালা ঝরে এবং আমার নাক দিয়ে পোটা ঝরে, তখন এটা আমার মুখের মুক্তোর শোভা নয়। এটা হল বার্ধক্যের রৌদ্রে যৌবনের বরফ গলে যাওয়ার লক্ষণ। আমার দাঁত হারানো একটা ছোট শিশুর মতো নতুন একটা সেট পাওয়ার লক্ষণ নয়। এই লক্ষণটা হল যে, আমাদের জন্য খাবার সুবিধা শেষ হয়ে যাচ্ছে যেটা যমরাজ ফিরিয়ে নিচ্ছে। যখন আমার অনেক লালা বের হয় এবং আমি কথা বলার সময় থুতু ফেলি, এটা পৃথিবীতে জল ছিটিয়ে পরিষ্কার করার জন্য নয়। এই লক্ষণটি হল, আমার শব্দ শেষ হয়ে আসছে। যখন আমি অসংগতভাবে কথা বলি অথবা আমি কথা বলতে বলতে হোঁচট খাই, তখন এমন হয় যে, আমি একটা অদ্ভুত বিদেশী ভাষায় কথা বলছি। এই লক্ষণটি হল যে সারাজীবন অলস আড্ডায় কথা বলে বলে আমার জীভ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।”
“যখন আমার চেহারা কুৎসিত দেখতে হয়ে যায়, তখন এর অর্থ এটা বোঝায় না যে আমি বানরের মুখোশের আড়ালে নিজেকে লুকোনোর চেষ্টা করছি। আমি যে শরীর ধার ক’রে ধারণ করেছি সেটার সম্পূর্ণ অধঃপতনের দিকে যায়। আমার মাথা যখন খুব কাঁপে, এর মানে এটা নয় যে, আমি আপনার কথায় অসহমতি ব্যক্ত করছি। এটা হল যমরাজের লাঠির অপ্রতিরোধ্য শক্তির লক্ষণ, যেটা দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করেছে। আমি যখন মাথা নিচু করে হাঁটি, এর অর্থ এই নয় যে, আমি একটা সূচকে খুঁজি যেটা আমি হারিয়ে ফেলেছি। এটা আমার শরীরে পৃথিবী-ধাতুর অবক্ষয়ের একটা স্পষ্ট ইঙ্গিত।”
“আমি যখন উঠে দাঁড়ানোর জন্য নিজের হাত এবং হাঁটুর সাহায্য নিই, তার মানে এই নয় যে আমি কোন চতুষ্পদ পশুর অনুকরণ করছি। এর কারণ হল আমার পায়ে আর পর্যাপ্ত শক্তি নেই। আমি যখন বসি, তখন মনে হবে যেন কোন বস্তাকে ধপাস করে ফেলে দেওয়া হল। এটা এমন নয় যে, আমি নিজের বন্ধুদের উপর রাগ করে আছি। ব্যাস, আমার শরীরের উপর আমার আর নিয়ন্ত্রণ নেই।”
“আমি যখন ধীরে-ধীরে হাঁটি, তখন আমি একজন মহান রাষ্ট্রনায়কের মতো হাঁটার চেষ্টা করছি না। এর কারণ হল আমি আমার শরীরের ভারসাম্যের সম্পূর্ণ অনুভূতি হারিয়ে ফেলেছি। যখন আমার হাত কাঁপে, তখন সেটা এই বোঝায় না আমি হাত নাড়ছি কিছু পাওয়ার লোভে। এটা হল একটা লক্ষণ যে মৃত্যুর দেবতা বা যমরাজ আমার কাছে থেকে সবকিছু কেড়ে নিচ্ছে। আমি যখন অল্প পরিমাণে খাবার খাই বা পান করি, সেটার কারণ এই নয় যে, আমি কৃপণ বা ব্যয়কুন্ঠ। এটা হল আমার জঠরাগ্নি হ্রাসের লক্ষণ। যখন আমি হালকা পোশাক পরি, এটা ক্রীড়াবিদদের অনুকরণ করার চেষ্টা নয়। এর কারণ হল আমার শরীরের দুর্বলতার কারণে পোশাক পরিধান করা বোঝা মনে হয়।”
“যখন আমার শ্বাসকষ্ট হতে থাকে আর শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়, এর অর্থ এই নয় যে আমি কাউকে মন্ত্র ফুঁকে সুস্থ করছি। এটা হল আমার শরীরের শক্তির ক্ষয় এবং ক্লান্তির লক্ষণ। আমি যখন বেশি কাজ করতে পারি না আর নিষ্ক্রীয় হয়ে পড়ি, তখন সেটা এই বোঝায় না যে, আমি ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের কার্যকলাপকে নিয়ন্ত্রণ করছি। এর কারণ হল একজন বৃদ্ধ ব্যক্তির ক্ষমতা সীমিত থাকে। আমি যখন খুব ভুলোমনা হয়ে যাই, তার মানে এটা নয় যে, আমি অন্যদের গুরুত্ব দিই না অথবা তাদের অবজ্ঞা করি। এটা হল আমার স্মৃতির চেতনার অধঃপতনের লক্ষণ।”
“হে যুবক, আমাকে উত্যক্ত কোরো না এবং আমাকে নিয়ে ঠাট্টা কোরো না। এখন আমি যেটা অনুভব করছি সেটা আমিই শুধু অনুভব করছি না। প্রত্যেক মানুষকে এর মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। তুমি অপেক্ষা কর এবং দেখ তিন বছরের মধ্যে তোমার সামনে বার্ধক্যের কিছু সন্দেশবাহক লক্ষণ আসবে। আমি যেটা বলি সেটা তুমি বিশ্বাস করবে না অথবা পছন্দ করবে না, তবে তুমি অভিজ্ঞতা থেকে শিখবে। পঞ্চকষায়কালে তুমি আমার মতো বুড়ো হয়ে বেঁচে থাকার মতো ভাগ্যবান হবে। আমি যতদিন বেঁচে আছি ততদিন যদি তুমি বেঁচে থাক, তাহলেও তুমি আমার মতো এত কথা বলতে পারবে না।”
যুবকটি উত্তর দেয়, “আপনার বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকতে এবং আপনার মতো কুৎসিত হয়ে আর উপেক্ষিত হয়ে বেঁচে থাকতে, কুকুরের মর্যাদায় থাকার চেয়ে মরে যাওয়াই ভালো।”
বৃদ্ধ মানুষটি হাসেন। “যুবক, তুমি বড়ই অজ্ঞ এবং বোকা, দীর্ঘজীবী হতে চাও এবং সুখীও হতে চাও, কিন্তু বার্ধক্য ছাড়াই? মৃত্যু শুনতে সহজ হতে পারে, কিন্তু এটা অত সহজ নয়। শান্তিতে এবং সুখে মরতে সক্ষম হওয়ার জন্য, তোমাকে এমন একজন হতে হবে, যে অনুচিতভাবে কিছু প্রাপ্ত করেনি অথবা দশটি ইতিবাচক বা কুশল কর্মের নৈতিকতা ভঙ্গ করেনি, এবং যে ধর্ম বিষয়ে পর্যাপ্ত শ্রুতি সঞ্চয় করেছে এবং চিন্তন ও সাধনা করেছে। তবেই তখন মৃত্যু সহজ হবে।”
“কিন্তু আমি এরকম অনুভব করি না। আমি আশ্বস্ত নই আমি কোন গঠনমূলক কাজ করেছি কি না। আমি মৃত্যুকে ভয় পাই, আর আমার এক-একটা দিন জীবিত থাকার জন্য আমি কৃতজ্ঞ বোধ করি। আমার দৃঢ় ইচ্ছা হল এক-একটা দিন জীবিত থাকা।”
যুবক তার মত পরিবর্তন ক’রে বলেন, “বৃদ্ধ মহাশয়, আপনি যেটা বলছেন সবই সত্য। অন্যরা আমাকে বার্ধক্যের দুঃখের বিষয়ে যা বলেছে এবং আমি আপনার মধ্যে যেটা দেখেছি তার সাথে একমত। আপনি বৃদ্ধাবস্থাকে যেভাবে আমার সামনে তুলে ধরেছেন তার কারণে আমার বুদ্ধি লাভান্বিত হল। বার্ধক্যের দুঃখ দেখে আমি স্তম্ভিত। হে জ্ঞানী বৃদ্ধ মহাশয়, আপনি যদি বার্ধক্য থেকে রেহাই পাওয়ার কোন উপায় শুনে থাকেন, তাহলে সেগুলি গোপন রাখবেন না; সেগুলি আমার সাথে শেয়ার করুন এবং আমাকে সত্যটা বলুন।”
বৃদ্ধ আনন্দের সাথে বলে উঠলেন, “অবশ্যই, একটি পদ্ধতি আছে। যদি আপনি সেটা জেনে যান, এটা অনুসরণ করা সহজ। খুব অল্প পরিশ্রমের মাধ্যমে আমরা এই কষ্ট থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে পারি। যদিও যারা জন্ম নেয় তারা সকলেই মারা যায়, তবে খুব কম লোকই বৃদ্ধ হওয়ার পর মারা যায়, বার্ধক্যে পৌঁছনোর সুযোগ না পেয়ে অল্প বয়সে মারা যায়। পদ্ধতিগুলি বুদ্ধের শিক্ষায় রয়েছে। তাদের মধ্যে মুক্তি এবং বোধিলাভের অনেক পদ্ধতি রয়েছে, অন্য কথায় পুনর্জন্ম না হওয়া, বৃদ্ধ না হওয়া, অসুস্থ না হওয়া অথবা মারা না যাওয়ার পদ্ধতি; কিন্তু আমরা সেগুলি অনুশীলন করিনি।”

একটি মঠের আবাসে একজন স্ব-প্রতিষ্ঠিত লামা থাকতেন। তিনি ছিলেন সেই মঠের কনিষ্ঠ সদস্য, মঠের অধিকাংশ ভিক্ষুরা তাকে গুরুত্ব দিত না। আবাসের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার জন্য তারা একটা বৈঠক করেছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, মৃতদেহ বাঁধার জন্য দড়ি ও চাদর প্রস্তুত করতে। সকলে বললেন যে এটা একটা অশুভ লক্ষণ এবং তার উপর ক্রোধিত হল। তারপর সকলে মঠটিকে সাহায্য করার জন্য প্রত্যেকের কী কী করা উচিত সেটা নিয়ে আলোচনা করেছিল। তিনি বললেন যে, সমস্ত মঠবাসীদের অনিত্যতার উপর ধ্যান করতে বলেছিলেন। একথা বলে তিনি তাদের একটা মহান শিক্ষা দিলেন। পরবর্তীকালে অনেক দালাই লামা তাঁর প্রশংসা করেছেন। ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হতে আমাদের মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হতে হবে।

“প্রত্যেকেই অমরত্ব এবং সেটা অর্জন করার পদ্ধতি জানতে চায়। কিন্তু কারও জন্ম হবে, মৃত্যু হবে না, এটা অসম্ভব। এমনকি, শাক্যমুনি বুদ্ধ সহ হাজার-হাজার পূর্ণ বোধিলাভ করা মহাসত্ত্বগণ মৃত্যুকে বরণ করেছেন। আর অতীতের বোধিসত্ত্ব এবং মহান গুরুদের বিষয়ে বলতে গেলে শুধুমাত্র তাদের নামই অবশিষ্ট আছে। বিশ্বের ইতিহাসেও এর প্রমাণ পাওয়া যায়। সমস্ত মহান ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব মারা গেছেন এবং শুধুমাত্র রয়ে গেছে তাদের ধ্বংসাবশেষ। সুতরাং, আমাদের আসন্ন মৃত্যুর বাস্তবতাকে ভুলে যাওয়া উচিত নয়। এমনকি বর্তমানের মহান গুরুরাও একদিন চলে যাবেন। আজ জন্ম নেওয়া শিশুরা একশত বছরের মধ্যে মারা যাবে। তাহলে, যুবক, তুমি কীভাবে আশা করতে পার যে তুমি একা চিরকাল বেঁচে থাকবে? এইজন্য, এটাই ভাল হবে যে তুমি আধ্যাত্মিকভাবে নিজেকে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত করো।”
“দীর্ঘ আয়ু না টাকা দিয়ে কেনা যায়, নাই বা শরীরকে আরাম দিয়ে লাভ করা যায়। তোমার মধ্যে যদি আধ্যাত্মিক আত্মবিশ্বাস থাকে এবং তুমি জীবন থেকে যা চাও সেটা জানো, তাহলে তুমি শারীরিকভাবে যত বয়স্ক হবে, তোমার মনের সুখ এবং তারুণ্য তত বেশী হবে। তুমি যদি দারুণ শারীরিক আরাম উপভোগ কর কিন্তু খালি জীবন-যাপন কর, তাহলে তুমি যত বয়স্ক হবে, ততই অসুখী হতে থাকবে। মৃত্যুর চিন্তা থেকে তোমার মনকে বিক্ষিপ্ত করতে তোমাকে পর্যটক হিসাবে ভ্রমণ করতে হবে। অন্যদিকে, এমনকি যদি তোমার সামান্য আধ্যাত্মিক আত্মবিশ্বাস থাকে, তুমি যতই মৃত্যুর কাছাকাছি পৌঁছবে, ততই তুমি একটা সুখী বাড়িতে ফিরে আসা পুত্রের মতো অনুভব করবে। তুমি মৃত্যু দ্বারা বিতাড়িত হবে না, বরং সুখের জীবন অব্যাহত রাখার জন্য উন্মুখ হবে।”

একবার একজন মহান আধ্যাত্মিক গুরু বলেছিলেন, “কারণ আমার ভবিষ্যৎ জন্মের প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে; তাই আমার কোন চিন্তা নেই। মৃত্যু যেকোন সময় আসতে পারে এবং আমি এটাকে স্বাগত জানাব।”

“যেহেতু মৃত্যুর দুঃখ অনিবার্য, তাই এরজন্য আমাদের কিছু না কিছু করতে হবে। আমরা শুধু হাত গুটিয়ে বসে হতাশ হতে পারি না। মানুষ হিসাবে আমাদের অনেক পদ্ধতি নিয়ে চেষ্টা করার জ্ঞান আছে। হে যুবক, এমনকি বুদ্ধও তোমাকে এর চেয়ে স্পষ্ট শিক্ষা দিতে পারবেন না। আমি আমার হৃদয় থেকে কথাগুলি বলেছি। যদিও এটা আমার সত্যিকারের আন্তরিক উপদেশ, তবুও শুধু আমার কথার উপর নির্ভর করবে না; সেগুলি নিজের পক্ষ থেকে বিশ্লেষণ কর। একটা প্রবাদ আছে, ‘অন্যের মতামত চাও, কিন্তু সিদ্ধান্ত নিজে নাও।’ তুমি যদি অনেককে তোমার হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দাও, তবে অনেকেই তোমাকে বিভিন্ন পরামর্শ দেবে।”
যুবকটি বলল, “আপনি যেটা বলছেন সেটা খাঁটি সত্য এবং উপকারী। কিন্তু, আগামী কয়েক বছর আমি এইসব করতে পারব না। আমার অন্য কাজ করার আছে। আমার প্রচুর সম্পত্তি, সম্পদ ইত্যাদি আছে। আমাকে অনেক ব্যবসা করতে হবে এবং আমার সম্পত্তির দেখা-শোনা করতে হবে। কিছু বছর পরে আপনার সাথে আমি আবার দেখা করব, তারপর আমি অনুশীলন করব।”
বৃদ্ধ মানুষটি খুব অসন্তুষ্ট হয়ে বললেন, “তুমি আমাকে যা বলেছ, এখন সেই সবই ব্যর্থ কথা এবং অর্থহীন। আমারও একই কথা ছিল, কয়েকবছর পর অর্থবহ কিছু করার ইচ্ছা ছিল; কিন্তু আমি কখনোই কিছু করিনি এবং এখন বৃদ্ধ হয়ে চলেছি। আমি জানি তুমি যা বললে সেটা কতটা অসার। কয়েক বছরের মধ্যে কাজগুলি করে ওঠা কখনোই শেষ হবে না। তুমি সবসময় সেটাকে স্থগিত রাখতে চাইবে। কয়েক বছরের মধ্যে করতে চাওয়া কাজগুলি বৃদ্ধের দাড়ির মতো হবে; তুমি যদি আজ দাড়ি কেটে ফেলো, তাহলে আগামীকাল আবার নতুন বের হবে। আজকের কাজ আগামীকালের জন্য রাখতে রাখতে তুমি বুঝতে পারবে যে তোমার জীবন শেষ হয়ে গেছে। ধর্ম সাধনার এই বিলম্বতা সবাইকে বোকা বানিয়েছে। তোমার উপর আমার কোন আস্থা নেই যে, তুমি কখনো ধর্ম অনুশীলন করবে না। অতএব, আমাদের মধ্যে কথা বলাটা সম্পূর্ণ অর্থহীন হয়ে গেল। তুমি বাড়ি ফিরে যাও এবং যা খুশি কর, আর আমাকে কিছু মণি মন্ত্র (ওঁ মণি পদ্মে হুঁ) জপ করতে দাও।”
যুবকটি খুব বিস্মিত হয় এবং কিছুটা আঘাত অনুভব করে। যুবক বলে উঠল, “আমাকে আপনি এমন কথা বলার কথা ভাবলেন কী করে? আমাকে বলুন, এই জীবনে কত তাড়াতাড়ি ভৌতিক সম্পদ সঞ্চয় করা যায়?”
বৃদ্ধ হেসে ফেললেন, “তুমি আমাকে এই প্রশ্ন করলে, তাই আমি অনুমান করলাম যে কোন কিছু সম্পাদন করতে কতক্ষণ লাগে আমাকে তার উত্তর দিতে হবে। দক্ষিণ দিকে মৃত্যুর দেবতা (যমরাজ) বাস করেন যিনি তোয়াক্কা করেন না যে তুমি কাজ শেষ করেছ কিনা। তিনি যা খুশি তাই করেন। তুমি যদি তার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে পার এবং জীবনে কিছু করার জন্য তার অনুমতি পেতে পার তাহলে তুমি ভোগ করতে পার। অন্যথায়, তুমি আরাম করতে পারবে না। এমন লোকজন আছে যারা মারা যায়, এক কাপ চায়ের মাঝখানে, খাবার টেবিলে থাকা অবস্থায়, হাঁটা-চলার সময়, নস্যি নাকে টানার আগেই।”
“এটি প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই ঘটে, এমনকি মহান আচার্যদের ক্ষেত্রেও। তাদের অনেক শিক্ষাই অসম্পূর্ণ থাকে, কারণ তাঁরা সেগুলির লেখা শেষ করার আগেই মৃত্যুকে বরণ করেছেন। তাই, যখন মৃত্যুর দেবতা আসবেন, তখন তুমি বলতে পারবে না, ‘আমার প্রচুর সম্পত্তি আছে এবং অনেক কাজ আছে।’ তুমি তার কাছে কিছু নিয়ে গর্ব করতে পারবে না; তোমাকে সবকিছুই ছেড়ে চলে যেতে হবে। এইক্ষেত্রে, আমরা পূর্ণতঃ অসহায়। আমরা জীবনকাল নির্ধারণ করতে পারি না। অতএব, তুমি যদি কিছু করতে সক্ষম হও তাহলে এখনই অনুশীলন শুরু কর। সেটাই হবে অর্থবহ; অন্যথায়, তোমার সম্পত্তি একা অর্থহীন হয়ে থাকবে। কিন্তু আজকাল এমন অনেক কম লোক আছে, যারা তোমাকে সত্যি-সত্যিই বলে যে, কী করলে তোমার ভাল হবে। এর চেয়েও বিরল হল এমন কেউ যারা আন্তরিক পরামর্শ শোনে।”
যুবক গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হয় এবং বৃদ্ধের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাবোধ তৈরী করে, কয়েক পা পিছিয়ে তাকে প্রণাম করে এবং বলতে লাগে, “স্বর্ণ পতাকা, গেশে অথবা যোগীদের দ্বারা পরিবেষ্টিত লামাদের থেকে এত গভীর জ্ঞান অর্জন করা যায় না, যেরকম আপনি আমাকে দিয়েছেন। আপনার চেহারা একজন সাধারণ বৃদ্ধের মতো, কিন্তু আপনি আসলে একজন মহান কল্যাণমিত্র। কথা দিলাম আপনি যা বলেছেন, সেটা আমার সামর্থ্য অনুযায়ী অনুশীলন করব এবং ভবিষ্যতে দয়া করে আমাকে আরও শিক্ষা দেবেন।”
বৃদ্ধ সম্মত হয়ে তার আগ্রহ গ্রহণ করলেন। তিনি বলেন, “আমি বেশি কিছু জানি না, তবে আমি অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। সেগুলি থেকে আমি তোমাকে শিক্ষা প্রদান করতে পারি। সবচেয়ে কঠিন কাজ হল শুরু করা এবং নিজেকে ধর্মের পথে প্রতিষ্ঠা করা। বয়স হয়ে যাওয়ার পর ধর্মের সাধনা শুরু করা বেশী কঠিন। অতএব, অল্প বয়সেই শুরু করা গুরুত্বপূর্ণ।”
“যখন তুমি তরুণ, তোমার স্মৃতি তাজা আছে; তোমার শক্তিশালী বুদ্ধিমত্তা এবং সাষ্টাঙ্গ প্রণাম দ্বারা ইতিবাচক শক্তি উৎপন্ন করার শারীরিক শক্তি আছে। তন্ত্রের পরিপ্রেক্ষিতে, যুবাবস্থায় আমাদের শক্তি প্রণালী খুব সুদৃঢ় থাকে এবং নাড়ীশক্তিও খুব ভাল থাকে। যদি অল্প বয়সে, তুমি লোভ এবং ভৌতিক সম্পদের প্রতি আসক্তির বাধা ভেঙে নিজেকে আধ্যাত্মিক কার্যকলাপে যুক্ত করতে পার, তবে এটা অত্যন্ত মূল্যবান হবে। একবার তুমি ধর্মকে গ্রহণ করলে, এর প্রয়োজনীয় বিষয়গুলি বুঝতে পারবে এবং এর চেতনায় অধিষ্ঠিত হবে, তারপর তুমি যা করবে, বলবে এবং চিন্তা করবে সেটাই হবে ধর্ম।”

মিলারেপা এবং রা-লোচাবা একই কথা বলেছিলেন, “যখন আমি খাই, হাঁটাচলা করি, বসি, অথবা ঘুমাই- সেটা হয় ধর্ম-অনুশীলন।”

“ধর্মে কোন কঠোর নিয়ম নেই। তাই, খুব বেশী চিন্তা-ভাবনা অথবা চঞ্চল মন না রাখার চেষ্টা কর। এখনই শুরু কর এবং ধর্মের প্রতি তোমার আগ্রহ বজায় রাখ। প্রতি মিনিটে তোমার মন পরিবর্তন করবে না। এই মুহুর্ত থেকে, তোমার জীবন- কায়, বাক্‌, চিত্তকে- ধর্ম-অনুশীলনে উৎসর্গ কর।”
“এবার বৃদ্ধ যুবককে বললেন যে, ধর্মের সাথে কী কী প্রয়োজনীয়তা থাকে, “সর্বপ্রথম একজন যোগ্য গুরুর খোঁজ কর এবং তোমার ভাবনা ও কর্মের মাধ্যমে তার নিকট নিজেকে সমর্পণ কর। তুমি অন্যদের কতটা উপকার করতে পারবে সেটা নির্ভর করে একজন আধ্যাত্মিক গুরুর খোঁজ পাওয়ার উপর এবং তার সাথে আপনার আন্তরিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সম্পর্কের উপর।”

অতীশও এই বিষয়টির উপর জোর দিয়েছিলেন। তিনি প্রায়শই বলতেন যে তার ১৫৫জন গুরুর প্রতি তার সমানভাবে আন্তরিক প্রতিশ্রুতি ছিল।

“এরপর তোমার নিজের সময় (পণ) এবং দশটি কুশল কর্মের পালন করার প্রতিজ্ঞা করতে হবে। তুমি তোমার চোখের মতো সেগুলি রক্ষা কর। এই জীবনের প্রতি তোমার উচ্ছেদ করে ফেল, যেমন- একটি বন্য হাতি শিকল ভেঙে দেয়। এরপর শ্রবণ, চিন্তন এবং ধ্যান-সাধনা সঞ্চয় কর, আর এগুলি একসাথে অনুশীলন কর। এর সাথে সপ্তাঙ্গ অনুশীলনও কর। এটাই হল ইতিবাচক শক্তি গড়ে তোলা, পুণ্য সঞ্চয় করার উপায়। এগুলি করা হয়ে গেলে বুদ্ধত্ব লাভ করা তোমার হাতের মুঠোয় চলে আসবে।”

পঞ্চম দালাই লামা বলেছিলেন যে একজন যোগ্য গুরু যদি একজন যোগ্য শিষ্যকে পথপ্রদর্শন করেন তবে বুদ্ধত্বকে নিজের হাতে দিয়ে রূপ দেওয়া যেতে পারে। মিলারেপা আরও বলেছেন যে, আপনার যদি একজন যোগ্য গুরু থাকে এবং একজন যোগ্য শিষ্য ঐ যোগ্য গুরুর শিক্ষার অনুশীলন করে তবে বুদ্ধত্ব আপনার নাগালের বাইরে থাকে না; এটা আপনার মধ্যেই বিরাজমান থাকে। যাইহোক, একজনকে সর্বদা জোর দিতে হবে যে গুরুকে অবশ্যই যথাযথভাবে যোগ্য হতে হবে।

“এটাই হল সুখ, এটাই হল আনন্দ। হে প্রিয় পুত্র, এভাবে সাধনা করলে তোমার সমস্ত মনোস্কামনা পূর্ণ হবে।”

এই শিক্ষাগুলি মনকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য খুবই উপকারী। সেগুলি একটা কঠিন চিত্তকে নরম ক’রে দেয়। একটা প্রবাদ আছে যে, “মাখন রাখার জন্য চামড়ার ব্যাগের মতো হয়ো না। জলস্রোতের মধ্যে নুড়ির মতো হয়ো না।” চামড়ার ব্যাগের ভিতরে মাখন যতই থাকুক না কেন, ব্যাগটি কখনো নরম হয় না। জলস্রোতের মধ্যে পাথর যতক্ষণই থাকুক না কেন, সেটাও নরম হয় না।

সেই দিনের পর থেকে সেই যুবকটি আটটি লৌকিক এবং শিশুসুলভ আচরণ থেকে মুক্ত শুদ্ধ ধর্মের সাধনা করেছিলেন।

আমাদেরও সেটাই করার চেষ্টা করতে হবে। আমরা যত বেশি শিক্ষা শ্রবণ করি, আমাদের তত বেশি অনুশীলন করতে হবে এবং সেগুলির মাধ্যমে নিজেদেরকে গড়ে তুলতে হবে, স্রোতের নুড়ির মতো হলে হবে না যেটা কখনও নরম হয় না।

বৃদ্ধ বললেন, “আমি আমার আধ্যাত্মিক গুরুর কাছ থেকে এই শিক্ষাগুলি শ্রবণ করেছি এবং সেগুলিও অনুভব করেছি আমার নিজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে। এই শিক্ষাগুলি যেন অসংখ্য প্রাণীদের সুখার্থে লাভদায়ক হয়!

লেখকের উপসংহারঃ

যদিও আমি অল্প অনুশীলন করেছি এবং আমাদের মধ্যে ধর্মের অভিজ্ঞতার অভাব রয়েছে, তবুও প্রাণীদের স্বভাব বৈচিত্রের কারণে, এই শিক্ষাগুলি কারও কারও জন্য উপকারী হবে। সত্ত্বদের মনের হিতের আশায়, আন্তরিকতা ও বিশুদ্ধ প্রেরণার সাথে আমি এটা লিখলাম। অনিত্যতার উপর নির্ধারিত এই শিক্ষাগুলি কেবল একটি মজার গল্প নয় যেটা আমি বলার জন্য ভেবেছিলাম। তবে এটা আর্যদেবের ‘চতুঃশতকের’ উপর ভিত্তি ক’রে লেখা।
Top